Friday, May 3, 2013

যুক্তিবাদী সমিতি এবং হিউম্যানিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলন

শুরু হল যুক্তিবাদী সমিতি এবং হিউম্যানিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলন ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি এবং হিউম্যানিস্টস অ্যাসোসিয়েশন –এর কেন্দ্রীয় কমিটির বার্ষিক সম্মেলন। পুরুলিয়ার আদ্রা শহরের রেলওয়ে নর্থ ইন্সটিটিউট হলে ২ মার্চ সকালে  দুই সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের সূচনা করেন সংস্থার সভাপতি প্রবীর ঘোষ এবং স্থানীয় সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। স্বাগত ভাষণ দেন প্রবীর ঘোষ। যুক্তিবাদী সমিতির এটা ২৮ তম এবং হিউম্যানিস্টস অ্যাসোসিয়েশনে ২০ তম সম্মেলন। বাঁকুড়া, বর্ধমান, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, উঃ দিনাজপুর, দঃ ২৪ পরগণা, হুগলী, দার্জিলিং, কোলকাতা সহ বেশ কয়েকটি জেলা এবং ত্রিপুরা, ঝাড়খন্ড সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে ৮৬ জন প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করেছেন।
বাসুদেব বাবু তাঁর শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, বিজ্ঞানকে ঘরে বন্দি না রেখে মানুষের কাছে পৌছে দিতে হবে। গবেষণাগারেও বিজ্ঞান বন্দি অবস্থায় থাকলে কোনও লাভই হবেনা, যদিনা মানুষের মধ্যে পৌছে দেওয়া যায়। যুক্তিবাদী সমিতি এই কাজগুলি দীর্ঘদিন ধরে করছে, তাই ধন্যবাদ।
বাসুদেব বাবু আরও  বলেন, আজ  যেখানে সম্মেলন হচ্ছে সেই আদ্রার একটা ঐতিহ্য – সংস্কৃতি ছিল। বেশ কয়েকবছর হল সেসব স্তিমিত হয়ে গেছে। আমরা আবার নতুন ভাবে সেই সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবো। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আদ্রাকে সম্মেলনের স্থান হিসাবে বেছে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ যুক্তিবাদী সমিতি এবং যুক্তিবাদী আন্দোলন তথা যুক্তিবাদী সমিতির প্রাণপুরুষ প্রবীর ঘোষকে।
স্বাগত ভাষণ এবং সভাপতির ভাষণে প্রবীর ঘোষ বলেন, ১৯৮৫ সালে চলার পথ শুরু করেছে যুক্তিবাদী সমিতি। আগে কলকাতায় সম্মেলন হত, এখন বিভিন্ন জেলায় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আমরা বিজ্ঞান আন্দোলন বলতে শুধু বিজ্ঞানের সুযোগ সুবিধা সকলের মধ্যে পৌছে দেওয়াকেই একমাত্র কাজ হিসাবে মনে করি না। আমরা মনে করি প্রতিটি মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক এবং যুক্তিবাদী করে গড়ে তুলতে। সেই কাজ আমরা দীর্ঘ বছর ধরে করে চলেছি।  এখন আমাদের কাজকর্ম শুধু মাত্র তথাকথিত অলৌকিক কর্মকান্ডের ভান্ডা ফোঁড়ের মধ্যেই সীমাবন্ধ নেই। এখন কাজের ক্ষেত্র আরও  বেড়েছে। যুক্তিবাদী সমিতির নতুন সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দাস  খুব ভাল কাজ করছে। এখন বিপ্লবের নেতৃত্বে মধু, সত্যজিত, দ্বিজপদ, অনিকেত, প্রশান্ত সহ বেশ কিছু নেতা-কর্মী খুব ভালো কাজ করছে। যা আমার যৌবন অবস্থার কাজের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
যুক্তিবাদী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দাস তাঁর সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, সংগঠনের নানা শাখা মিলে এবছর দেড়শোর ওপর কুসংস্কার বিরোধী  ‘অলৌকিক নয়, লৌকিক’ অনুষ্ঠান হয়েছে। বিদ্যাসাগর জয়ন্তী, সুনীল স্মরন, যুক্তিবাদী-মানবতাবাদী দিবস পালনের মত অন্যান্য অনুষ্ঠান হয়েছে পঞ্চাশটির মত। ভুতে ধরা, ডাইনির অপবাদ দিয়ে অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, বাল্যবিবাহ, ওঝা-অবতার-জ্যোতিষী- বুজরুক পাকড়াও হয়েছে চল্লিশটির মত। শিশু মেলা, বইমেলা সহ নানা মেলা-উৎসবে বিভিন্ন শাখা স্টল করেছে।
২ এবং ৩ মার্চ দু’দিন  ধরে চলেছিল এই সম্মেলন। প্রথম দিন  সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পাঠ, শাখা এবং সদস্যদের পরিচয়, শাখার কাজের বিবিরণ পেশ, সমস্যা, সম্ভাব্য সমাধান সূত্র, তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং ‘নারী নির্যাতন এবং মানবতাবাদী আন্দোলন’ শিরোনামে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দিন, আগামী কর্মসূচী তৈরি করা, কমিটি মিটিং, উল্লেখযোগ্য কাজের জন্য সদস্যদের সম্মান প্রদান,  ‘বাংলাদেশে যুক্তিবাদী আন্দোলনের বর্তমান পরিস্থিতি’ শিরোনামে আলোচনা, সাংবাদিক সম্মেলন এবং সবশেষে  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সলিল চৌধুরী – ও আলোর পথযাত্রী  …………









No comments: