Tuesday, April 3, 2012

আরশি বিদ্যুৎ, তুমি -------------- অনিন্দ্য রায়

কিছুদিন আগে কিছু লোকের জঘন্য চক্রান্তে বাঁকুড়া জিলা স্কুলের সুপ্রাচীন শিমুল গাছটি কাটা শুরু হয়েছিল।স্কুলের অনেক মাষ্টারমশায়ের তীব্র আপত্তিতে জলঘোলা হলে শেষ পর্যন্ত চক্রান্ত ব্যর্থ হয়।ধন্যবাদ সমস্ত মাষ্টারমশাই, সুধী নাগরিক বৃন্দ এবং অবশ্যই নির্মাল্য বাবুকে যিনি  প্রথম এব্যাপারে হল্লা করে ফেসবুক কাঁপিয়ে ছিলেন।
কবি অনিন্দ্য রায় বেশ কয়েকবছর  আগে তার কবিতার বই 'তিরিশে ফেব্রুয়ারি' তে জিলা স্কুল- মাঠ-গাছ-কম্পাউন্ড নিয়ে একটি স্মৃতিসম্বলিত দীর্ঘ কবিতা উপহার দিয়েছিলেন পাঠকদের।সেখান থেকেই আজ এই ব্লগে কিছুটা অংশ তুলে দিলাম। পুরোটা না দিতে পারার খেদ এবং অপরাধ দুইই রয়ে গেল।


আরশি বিদ্যুৎ, তুমি



.

নীচু ছিল মেঘ সেই বনে

  বিরহের গাছ কিছু হলে

    এরমইতো হত মনে

      হয়



সেই বন ছিল আগে হাতের নাগাল

     ইহকাল

          এরমইতো হত



শনিবার ছুটি হলে স্কুল

বনে গিয়ে পাতা কুড়িয়েছি

   নীচু মেঘ লাগত মাথায়

       ভিজে যেত ব্যাকরণ

            বই



এই শনিবার ছুটি হলে

এরমইতো হত মনে হয়



.

যখন গুনতে পারতাম ফাল্গুনের হাড় কেউ আমার জন্য কিনে

               রেখেছিল সমীকরণের মত একটা চাদর

তা ছাড়া সে সব দিনের কথা মনেই পড়ত না

তখন কি ব্যান্ডপার্টি ছাড়া দেখা করতে আসত না গাঁদাফুল

                             নামের মেয়েটি ?

তা ছাড়া সে সব দিনের পিঠে চাবুকের দাগ ছিল বলে

                      অঙ্কগুলো উত্তরে মিলে যেত

যুক্তাক্ষর ছাড়াই একটার পর একটা রঙের নাম বলতে পারতাম

যতক্ষণে দম না ফুরোয় - সেই প্রথম ফুরিয়ে যাওয়ার শুরু -

একটা মাত্র চাদর, তার ওপর কত সহজেই মিশে গেছে ঘুম

কেবল দিনের বেলা সে সব কথা মনেই পড়ে না

যখন লিখতে পারতাম ফেব্রুয়ারির চরিত্র আমার লম্বাটে খাতায়

কেউ বুলিয়ে দিয়েছিল খয়েরি রবার, আর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম

নয়তো এখনো খেলতে পারতাম ছায়াগুলোর সাথে ?



.

বারান্দায় পোষাকগুলো ঝুলছে আর রাস্তার লোক

               পোষাক দেখে ভাবছে আমার কথা

ঘরে আঁশরঙা ঘুমের ভেতর শুয়ে আছি

পোষাকগুলো আমার মত হাওয়ায় দুলতে দুলতে

....................................

..................... (তিরিশে ফেব্রুয়ারি / অনিন্দ্য রায় ;   প্রকাশকঃ এখন বাংলা কবিতার কাগজ ও জার্নি 90s)