বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ইন্ডোর বিভাগের পিছনের দিকে অবস্থিত স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে একটি কালি মন্দির আছে যেখানে হাসপাতালেরই চতুর্থশ্রেণীর এক কর্মী সতীমা সহিস প্রতিদিন বিভিন্ন বহিরাগত মানুষের অসুখ, ভুতে পাওয়া, নজর লাগার সমাধান হিসেবে তাদের ওপর ঝাড়ফুক-তুকতাক করেন। দূর দুরান্ত থেকে আসা অসহায় রোগীরা তাদের দুর্বল মুহূর্তে সতীমার কাছে গিয়ে আরও অসুস্থ এবং নিঃস্ব হচ্ছেন। ঝাড়ফুক করতে গিয়ে অসুস্থ মানুষের ওপর অবৈজ্ঞানিকভাবে অত্যাচার চালানো হচ্ছে এমনকি নাকে মুখে লঙ্কার ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে।
মন্দিরে ভরগ্রস্ত অবস্থায় সতীমা সহিস
এসব দেখে স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগছে, যেখানে আমাদের দেশের ‘দ্য ড্রাগ এন্ড ম্যাজিক রেমিডিজ (অবজেকশ্যনাবেল অ্যাডভারটাইজমেন্ট)অ্যাক্ট-১৯৫৪’ অনুসারে অলৌকিক চিকিৎসায় রোগ সারানোর চেষ্টা করা বেআইনি সেখানে হাসপাতাল চত্বরে কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় দিনের পর দিন এধরনের অলৌকিক চিকিৎসা ব্যবসা চলছে কার মদতে? স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মী হয়েও সতীমা সহিস হাসপাতাল চত্বরে বেআইনি চিকিৎসা ব্যবসা করলে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটি মুখ বুজে সহ্য করলে জনসাধারনের কাছে কি বার্তা পৌঁছবে? জনসাধারণের একাংশ তো ভাবতেই পারেন পশ্চিমবংগ সরকারের স্বাস্থ্যবিভাগ বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার সাথে সাথে ঝাড়ফুককেও সমান গুরুত্ব দেয়।
আমরা বাঁকুড়ার বহু মানুসের কাছে অভিযোগ পেয়ে গত ২৩ আগস্ট ২০১০ ওই মন্দিরে যাই এবং ঝাঁড়ফুক চলাকালীন প্রতিবাদ করি। ইতিমধ্যেই আমাদের একজন সদস্য যে রোগী সেজে গেছিল, সতীমা তার কাছে রোগ সারানো মারফত টাকা দাবি করে। প্রতিবাদ চলাকালীন সতীমার বেআইনি ব্যবসার সাঙ্গো্পাঙ্গোরা চলে আসে, বিস্তর ভিঁড় হয় ও ব্যাপক ঝামেলার সৃস্টি হয়। ঘটনাটি কভার করতে থাকা নিউজ টাইমের চিত্রসাংবাদিককেও বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। কোনো সূত্র থেকে খবর পেয়ে বাঁকুড়া সদর থানা পুলিশ পাঠায়।
যুক্তিবাদী সমিতি সহ বাঁকুড়ার সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা স্বভাবতই এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করি এবং আশা করি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করে কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গঠনের কাজে সাহায্য করবেন।
গত ২৪ আগস্ট সুপারকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।
No comments:
Post a Comment