Wednesday, September 4, 2019

কাঁংড়ি : মৃতদেহ নিয়ে বাস করি

কাঁংড়ি -  ৬ #মৃতদেহনিয়েবাসকরি#
জামশেদপুরে জলের টানাটানি। ডিমনার জলে ই বছ্যর ঢল নাই। মানগো বস্তির উপর দিকের ঘরগুঁল্যাতে তিন ঘরে একটা চান ঘর। জল উঠ্যে কুঁয়া থ্যাকে, শুকায়্যেঁ পাথর বেরাঁই গ্যেছে ই বছর। তাই কাংড়িও বৌ বাচ্চা লিয়্যেঁ আস্যে গ্যেছে চাইবাসা।

রোরো কথা রাখে। রোরো লদীও আবার মানুষও। বালি বালি গরম্যে রোরো-র গা ঘামে। তির তির করে জল নামে। সেই ঘামে মোটা খড় ফিটিং করে দিল্যেঁই  'কল'। এক ঘটি দু মিনিটে। ঘন্টায় পাঁচ বালতি। বউ কে কাঁংড়ি  বলল্য, "ল্যে, যত মন করে জল খা, হাত ধু, পা ধু, কাপড় কাচ,  চান কর।"
শ্বশুর ট বড় মুখ খারাপ করছ্যেঁ সকাল থ্যেকে। উ খালি বলছ্যে, "ব্যালেন্স রাখহ হে জামাই। শুধু মরাগুল্যাকে লিয়ে কদিন বাঁইচব্যে?"
শ্বশুর একবার তাড়ি খায়্যেঁ ভুল বকা শুরু করল্যে চুপানো দায়। বেশি বলত্যে গেলে দা লিয়্যেঁ ছ্যুটে আসে।
ইব্যারে বলছ্যেঁ, "শুধু মরাগুল্যা লিয়ে কি করে বাঁচঅ বাপ?"
কাঁংড়ি সাহস করে শুধায়, " কে মরা?  আমি মরা?  তুমার বিটি, তুমার লাতি মরা? উয়াদের লিয়্যেঁই ত আছি।"

 শ্বশুরের মেজাজ আবার টঙে, "মরা নাই? তর শহরে খাট টেবিল চেয়ার দরোজা সব ত ডেডবডি রে। জামা-কাপড়, বই, খাতা, পেনসিল -সবকটাই মরা। পাহাড় কাট্যে তর ঘরের দ্যায়াল-ছাদ-মেঝ্যা। মরা গাছ, মরা পাহাড়, মরা মাটি। এত পাপ, এত পাপ। তর মরার সময় মুখে জলটুকুও কেউ দিতে আসব্যেক নাই। আমাদের ইখ্যানে থাক। খাটিয়া আছ্যে বঠ্যে আবার চারট্যা ছাগল আছ্যে। একটা হুড়কা আছে ত, ভুলা টঁকেও পুষ্যেছি। মাটির দ্যায়াল যেমন আছে, একটা ডবা আর পাড় ভত্তি বনও ত আছে। দ্যাখ আমি ম্যারেছিঁ,  জীবনও দিছিঁ। ব্যালেন্স রাখ বাপ, ব্যালেন্স"।

No comments: